Friday 16 March 2007

ছাঁয়া কন্যার শান্তির ছাঁয়া

আমি যখন মারা গেলাম তখন সন্ধ্যা ৭টার কিছু বেশি । আকাশটা ধুসর নীল । বিকাল থেকে বুক ব্যাথা করতেছিলো । হঠাৎ করে চলে গেলাম দূনিয়া থেকে ।

আমার আত্মাটা এখনো ঘরের ভেতর আছে । প্রিয়জনরা কাঁদছে দেখলাম । সারা বিশ্ব জেনে গিছে । চারদিক খবর পাঠানো হয়েছে । গ্রামের বাড়ী মানুষ পাঠানো হয়েছে পারিবারিক কবরাস্থানে সাড়ে ৩ হাত মাটি খোড়ার জন্য ।পারিবারিক মানুষ আসা শুরু করেছে বাসায় । আমার লাশকে একটু পর গোছল করাবে শুনলাম । মসজীদ থেকে খাটিয়া আনছে । হুজুর আসছে ।

রাত ১২টা কয়েক মিনিট । কে যেনো বললো ফজরের নামাজের পর কবর দেওয়া হবে । এর মধ্যে পরিবারের মানুষ এসে যেন শেষবারের মত আমার মুখটা দেখতে পায় ।

আমার শরীরকে গোছল দেওয়া হলো । সাদা কাপড় পড়ানো হয়েছে । ধুপের গন্ধ বের হচ্ছে । গোলাপ জল ছিটালো কে যেনো ।

এতজন ছেড়ে আমাকে চলে যেতে হবে । খারাপ লাগছে । খুবই খারাপ । কান্না আসার মত খারাপ । আমার এক বন্ধু রেগে গেলে কান গরম হয়ে যায় । আরেকটু ফর্সা হলে হয়ত লাল হয়ে যেতো । দরকার নাই ফর্সা হওয়ার । যেমন আছে তেমনই ভালো । আযান দিছে ফজরের শুনলাম । কি মধুর কন্ঠ ।

আমকে আরেকটু পর খাটিয়াতে উঠাবে । আমি মাটির নিচে থাকবো কি করে ? আমার তো দম বন্ধ হয়ে যাবে । সাপ আসবে । উফফ , চিন্তা করতে চাচ্ছি না ।

. . . আমাকে কবর দিয়ে সবাই চলে গিয়েছে । আমার পেট ব্যাথা করছে । ভয় পেলে পেট ব্যাথা করে ।

. . . কয়েকদিন পরের কথা . . . আকাশে চাঁদনী রাত । ঐ গাছটার পাতার ফাক দিয়ে আলো পড়েছে আমার কবরের উপর । হঠাৎ একটা ছায়া পড়লো কবরের উপর । ছায়া কন্যার ছায়া । আমি জানতাম সে আসবে ।


আমি এভাবেই ঘুমিয়ে থাকবো । ছায়াকন্যার শান্তির ছায়ায় চিরকাল . . .

1 comment:

Anonymous said...

শাওন ভাইয়া,
আমার প্রচন্ড রকম হিংসা হচ্ছে। আপনি এত্ত ভালো লেখা করি করে লিখেন। আমি আপনার খুব কাছে আসতে চাই। ঠিক একটা সময় আপনার কথা গুলো আমার জন্য সত্যি হবে। চিন্তা করলেই গাঁ শিউরে উঠে....:(

আপনি ভালো থাকবেন আর আপনার জন্য আমার দোয়া রইলো।