Saturday 17 March 2007

অলস বিকেলের শেষ রোদ /প্রথম পর্ব

১৭টা বছর পার করে দিলাম জীবনের । নিজের মধ্যেই নিজে অনুভব করি অনেক কিছু পরিবর্তনের । কি পেলাম এই জীবনে ?? পাওয়া না পাওয়া মিলেই তো জীবন । আমি ব্যক্তিগত হিসাবে যে ভাবে মানুষ হতে চেয়েছি তার একটুও হয়নি । না , কোনো কিছুতেই কম করেননি আমার বাবা-মা । সেদিক থেকে হিসাব করলে অবশ্য একটু বেশিই পেয়েছি । কিন্তু তারা আমাকে বোঝেননি । তারা আমাকে সবসময় ছোট ভেবে গিয়েছেন । আমার মনে হয় তাদের কাছে আমি বড় হব না , চিরকাল ছোট থেকে যাব ।

প্রতিটা ছেলে-মেয়েদের মত আমারো বড় হয়ে কিছু হওয়ার শখ ছিল । কিন্তু আমার বাবা-মা আমাকে বোঝেননি । তাদেরও কিছু আশা ছিল যে , তাদের ছেলে বড় হয়ে তাদের আশানূযায়ী কিছু হবে , যেটা প্রতি বাবা-মাদেরই থাকে । এদিক থেকে ইউরোপিয়ান বাব-মা খুব ভাল । তাদের থাকে না কোনো আশা । তাদের কথা হল : ছেলের জীবন , ছেলেই বুঝবে সে বড় হয়ে কি করবে ।

ছোটবেলা থেকেই একটা বড় ভাই অথবা একটা ছোট বোন চেয়েছি । কিন্তু কি করে আমার আশা পূরণ হবে ?? আমিই তো তাদের বড় ছেলে । তাই দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানোর জন্য চেয়েছি একটা ছোট বোন অথবা একটা ছোট ভাই । কিন্তু আমার বাবা-মার কথা হচ্ছে : তুই তো আমাদের ছেলে , আবার তুই আমাদের মেয়ে । আমরা তো খুব সুখেই আছি । তাহলে কিসের জন্য দরকার আরেকটা ভাই অথবা বোন ?? এর উপরে আর কোনো প্রশ্ন থাকতে পারে না ।

আল্লাহ যে , প্রতিটা মানুষকে একি ভাবে স্ষ্টি করেননি সেটা কোরআনেই উল্লেখ আছে । কেউ খুব ব্রেনি আবর কেউ পড়ালেখাতে খুব খারাপ । আমি এমন মানুষ ও দেখেছি যারা অনেক পড়ালেখা করেও যা করতে পারেননি সেই কাজ করেছেন কম পড়ালেখা মানুষটি । কিন্তু ২য় ছেলেটির বাবা-মার দুঃখ হচ্ছে সে বেশি পড়াশোনা করেনি । এর জন্য দুঃখের কি আছে সেটাই তো আমার মাথায় আসে না ।

আর কিছু ভাল লাগে না । ঘরের মধ্যে শুয়ে এইসব চিন্তা করছি । বারান্দা থেকে আম্মু এবং আমার আন্টির ( আমার বন্ধুর মা ) গলা শোনা যাচ্ছে । কথার মাঝখানে আমার মা গলার স্বর নিচু করে ফেললো হঠাৎ করে । কউতুহল বসত খুবই শোনার ইচ্ছা হল কি বলছে তারা । দরজার আড়ালে যেয়ে দাড়ালাম ।

----- শাওনের যখন জন্ম হয় , তখন ডাক্তার বলে যে , শাওন যত বড় হবে ততই তার ব্রেন লোপ পেতে থাকবে । কথাটা শুনে আবার খাটে যেয়ে শুয়ে পড়লাম ।

মাগরিবের আযান দিয়েছে । নামাজ পড়তে চলে গেলাম মসজিদে । নামাজ পড়ে চাচাত ভাইকে সাথে নিয়ে চলে গেলাম মাইকেলের কপোতাক্ষর কোণে । চাঁদ উঠেছে । সুন্দর চাঁদ । চোখ দিয়ে দুই ফোটা নোনা পানি বেয়ে পড়ল । চাঁদের আলোতে চিকচিক করে উঠলো চোখের পানি । পাশে দাড়ানো চাচাত ভাই বললো : ভাইয়া তোমার চোখে পানি কেন . . . ???

3 comments:

Nure Alam Masud said...
This comment has been removed by the author.
Nure Alam Masud said...
This comment has been removed by the author.
Nure Alam Masud said...

শাওন,আমি জানি তুমি এখন এই ব্লগ আর ইউজ করো না। এটার জিমেইলেও ঢোকো না। তাই এই কমেন্ট পড়বেও না।
কিন্তু ব্লগটা পড়ে খারাপ লাগল।
আমি একটা কথা বলি কি, শুধু শুধূু কষ্ট পেয়ে কী লাভ?
এটা আমার নিজের জন্য তত্ব। আমি কখনো দুঃখবিলাস করি না। একসময় করতাম। আরো ছোট থাকতে। তারপর ২০০৮ সালের একদিন বাদ দিয়ে দিলাম এইসব দুঃখবিলাস।
আল্লাহর দেওয়া এই সুন্দর মনকে কষ্ট দিয়ে কী লাভ!
"বিষণ্ণ সুখ" কখনো "আসল সুখ" হতে পারে না.....